img

মেট্রো রেলের একটি পিলারের বিয়ারিং প্যাড পড়ে আবুল কালাম নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রো রেল স্টেশনের নিচে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবুল কালাম ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় মাথার ওপরে মেট্রো রেল চলাচল করছিল। একটি ট্রেন পার হওয়ার মুহূর্তে ওপর থেকে পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

আবুল কালামের দুই সন্তান ও পরিবারের দায়-দায়িত্ব নেবে কে?

মেট্রো রেলের একটি পিলারের বিয়ারিং প্যাড পড়ে আবুল কালাম নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট মেট্রো রেল স্টেশনের নিচে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আবুল কালাম ফুটপাত দিয়ে হাঁটার সময় মাথার ওপরে মেট্রো রেল চলাচল করছিল। একটি ট্রেন পার হওয়ার মুহূর্তে ওপর থেকে পিলারের একটি বিয়ারিং প্যাড মাথায় পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

 

সঙ্গে থাকা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তার নাম লেখা আবুল কালাম, বাড়ি শরীয়তপুরে। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়।

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঈশ্বরকাঠি গ্রামের জলিল চোকদারের ছেলে আবুল কালাম। নারায়ণগঞ্জের জলকাঠি এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন তিনি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে আবুল কালাম ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সি পরিচালনা করতেন।

 

নিহতের মেজো ভাবি আছমা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘দুপুর ১২টায় আবুল কালামের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয়েছিল। সে বলছিল, দুয়েক দিনের মধ্যে বাড়ি আসবে। বলেছিল, আমি যেন ইলিশ মাছ কিনে রাখি আর সে আর ফিরে এলো না।

নিহতের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি চোকদার জানান, আবুল কালাম খুব পরিশ্রমী, ভদ্র স্বভাবের মানুষ। নিজের চেষ্টায় ঢাকায় ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিলেন। এমন আকস্মিক মৃত্যু তাদের জন্য এক অসম্ভব বেদনার বিষয়।

তিনি বলেন, ‘সরকারের অবহেলার কারণে আমার ভাই মারা গেল। এখন তার পরিবারে দায়-দায়িত্ব কে নেবে?’

আবুল কালামের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

ছেলে আব্দুল্লাহর বয়স ছয় বছর আর মেয়ে সুরাইয়া আক্তারের বয়স চার বছর। স্বজনরা জানান, তিনি ব্যবসায়িক কাজে নিয়মিত ফার্মগেট এলাকায় যাতায়াত করতেন।

 

চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে ভাইদের মধ্যে সবার ছোট। ২০ বছর আগে বাবা ও মা মারা যান। এরপর বড় ভাই ও বোনদের কাছে বেড়ে ওঠেন। সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১২ সালে মালয়েশিয়ায় যান। সেখান থেকে ফিরে ২০১৮ সালে পাশের গ্রামের আইরিন আক্তারকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের ছয় বছরের এক ছেলে ও চার বছর বয়সী এক মেয়েসন্তান রয়েছে। স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায় বসবাস করতেন। ঢাকার মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে কাজ করতেন। ওই কাজের জন্যই প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা যাতায়াত করতেন।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রবিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে মতিঝিলে যান আবুল কালাম। এরপর কাজের জন্য সেখান থেকে বের হন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফার্মগেট এলাকায় মেট্রো রেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে যায়। সেটির নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান তিনি। এরপর গণমাধ্যমের সংবাদে পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর খবর জানতে পারেন। শুরু হয় স্বজনদের মাঝে আহাজারি। খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্বজনরা। গ্রামের বাসিন্দারাও কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রসঙ্গত, ফার্মগেট এলাকায় মেট্রো রেলের পিলার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। বিয়ারিং পড়ে নিহত আবুল কালামের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়েছে। দুপুরে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার লাশ দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।

এই বিভাগের আরও খবর